আমি গত সপ্তাহে ২৯ দিনের জন্য ফেসবুকের রেস্ট্রিকশনে পড়েছি যাতে আমি কোন পোস্ট, কমেন্ট, কোন ধরনের গ্রুপের এক্টিভিটি, এড দেয়া এসব করতে পারবো না। এছাড়াও বড় একটি রেস্ট্রিকশন হচ্ছে আমার সকল পোস্ট আগামি ২৯ দিন রিচ করবে না। আমার সকল পোস্ট আমার বন্ধুদের বা ফলোয়ারদের সবার টাইমলানের নিচে থাকবে।
আমার মতে Facebook এ মুক্ত ভাবে লেখালেখি করার কোন সুযোগ বর্তমানে ফেসবুক কতৃপক্ষ রাখেনি। Facebook তাদের কমিউনিটি স্টান্ডার্ড এর কথা বলে মুলত ইউজারদের লেখালেখিকে কন্ট্রোল করতে চায়। যেহেতু তারা তাদের এই প্লার্টফর্ম ফ্রিতে তাদের ইউজারদের ব্যবহার করতে দিয়ে থাকে সে জন্য হয়ত তারা এই কন্ট্রোল করার অধিকার রাখে। কিন্তু ব্যবাহার কারিদের জন্য দুঃখের ব্যাপার এই যে, বর্তমানে ফেসবুকের মত এত জনপ্রিয় আর কোন Social media প্লার্টফরম নেই যেখানে আপনি একই ধরনের কাজ করতে পারবেন। যেগুলো আছে সেগুলোতে যথেষ্ট ব্যবহারকারি নেই বা সুবিধা নেই। আর যেহেতু ফেসবুকের market competitor নেই বললেই চলে তাই তারা তাদের সুবিধামত নিয়মকানুন চাপিয়ে দিতে পারে এবং তাতে আপনার আমার জন্য সেগুলো মেনে নেয়া ছাড়া আর দ্বিতীয় কোন উপায় নেই।
ফেসবুকে ঠিক কি বিষয়ে লেখালেখি করা যাবে না বা কোন কোন কিওয়ার্ড ব্যবহার করা যাবে না তার কোন নির্দিষ্ট তথ্য নেই তবে তারা যা ক্ষতিকর মনে করে থাকে তাই করতে দিবে না। যদিও সেটা আদতে ক্ষতিকর নাও হয় বা কনটেক্স যদি ভিন্নও হয়।
ফেসবুক বলছে যে, তারা Nudity or other sexually suggestive content. Allow করে না কিন্তু বাস্তবে ফেসবুকে এসব কন্টেন্ট নিয়মিত শেয়ার হচ্ছে বিভিন্ন ভাবে। যেগুলো তারা সেভাবে কন্ট্রোল করতে পারে না।
এছাড়াও Hate speech, credible threats or direct attacks on an individual or group. এই পয়েন্টে আপনি কাউকে নিয়ে খারাপ কথা বা কাউকে গালি দিতে পারবেন না। বা কাউকে হুমকি ধামকি দিতে পারবেন না । এমন কিছু ভাষা এবং কিওয়ার্ড রয়েছে যেগুলো সব সময় গালি হিসাবে ব্যবহার হয়না কিন্তু সেগুলো লিখলে হয়তো ফেসবুক আপনাকে Restrict করবে। এছাড়াও মজার ছলে যদি আপনি আপনার বন্ধুকে থ্রেট দিয়ে বসেন সেটাও হয়ত রেস্ট্রিকশনের আওতায় আসবে।
এই পয়েন্টের কারনে আপনি আর আপনার রাগ ফেসবুকে দেখাতে পারবেন না। ধরুন দেশে বড় ধরনের কোন ভায়োলেশন হলো বা কোথায় রেপ হলো বা খুন হলো আপনি ঐ রেপিস্ট বা খুনির বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় কিছু লিখতে পারবেন না, কমেন্ট করতে পারবেন না।
অথবা কোন জঙ্গী সংগঠনের ব্যাপারে আপনি অন্যকে সচেতন করতে কোন পোস্ট করলেও হয়ত সেই সংগঠনের নাম থাকায় পোস্টটি Violation এর আওতায় পড়বে। এমনকি অনেক প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের নামকে তারা ব্যবহার করতে দিচ্ছে না।
এর বাহিরে আরো কিছু বিষয় আছে যেগুলো ফেসবুক Allow করে না বলে থাকে যেমনঃ Content that contains self-harm or excessive violence. Fake or impostor profiles. Spam.
এর সবগুলোই তারা AI দ্বারা ফিলটার করে থাকে আর এর ফলে অনেক পজেটিভ জিনিসও তাদের রেস্ট্রিকশনের আওতায় আসে আবার অন্যদিকে অনেক স্প্যাম তারা ঠিকিই ধরতে পারে না।
আমি প্রথম বারের মত বড় কোন Restriction এ পড়লাম। এই রেস্ট্রিকশন হয়ত একটি কিওয়ার্ড ব্যবহারের জন্য হয়েছিলো। আর যার জন্য সেই পোস্টটি পাবলিশ তো হয়নি বরং ফেসবুক পোস্টিকে অটো ডিলিট করে প্রায় সাথে সাথেই আমাকে ২৪ ঘন্টার জন্য পোস্ট ও কমেন্ট করতে না পারার রেস্ট্রিকশন দিয়ে দিয়েছিলো।
এছাড়াও লাইভে যেতে না পারা, গ্রুপ কোন ধরনের একটিভিটি না করতে পারা, এড দিতে না পারা,
সবচেয়ে বড় রেস্ট্রিকশন হলো আমার কোন পোস্ট আগামী ২৯ দিন পর্যন্ত রিচ করবে না। পোস্ট করলে তা ফ্রেন্ডস ফলোয়ারদের টাইমলাইনে শো করবে না, বা করলেও তা হয়ত টাইমলাইনের একদম শেষের দিকে থাকবে।
ঠিক কি শব্দ ব্যবহার করার জন্য এত বড় একটা রেস্ট্রিকশন পেলাম? মুলত আমি লিখছিলাম এশিয়াকাপের বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তানের খেলার বিষয় নিয়ে। সেই পোস্টিতে আফগানিস্তান শব্দের পাশাপাশি তালেবান শব্দটি ছিলো, যদিও এই শব্দগুলোর মাঝে বিভিন্ন স্পেশাল ক্যরেক্টার দেয়া ছিলো তবুও তা Facebook এর ফিল্টারে ধরা পড়েছে। যেমনঃ আমি লিখেছিলাম এভাবে- তালে/বান, Taলেbaন আবার আফ * গানি * স্তান।
আমি এটা জানি যে, ফেসবুক তালেবানকে একটি সন্ত্রাসী সংস্থা মনে করে। ফলে তাদের সব পোস্ট ও সমর্থনকারীর মন্তব্য এই প্ল্যাটফর্মে নিষিদ্ধ করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে আমার কোন দ্বিমত নেই। কিন্তু আমি যে বিষয়ে পোস্ট দিয়েছিলাম তা কখনই তালেবানকে প্রমোট করে না বা তাদের পক্ষ্যে কথা বলা হয় না। যাস্ট একটাদেশের সরকারের নাম নেয়া যেতেই পারে। এটা ফেসবুকের যথেষ্ট বাড়াবাড়ি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমার মতে ফেসবুকের উচিত তাদের এমন একটা শব্দের লিস্ট দেয়া যে গুলো ফেসবুকে ব্যবহার করা যাবে না । তাতে হয়ত অনেকে সে সব শব্দ এড়িয়ে পোস্ট করবে ।
0Comments
Post a Comment