শান্ত সাগরে নৌকা ভ্রমনের অভিজ্ঞতা নিতে এসে বিপদে পড়ে গেছেন দেশের অন্যতম তরুন অ্যাডভেঞ্চার উপন্যাস লেখক মলয়। উদ্দেশ্য ছিলো সরাসরি সমুদ্রে নৌকা ভ্রমনের অভিজ্ঞতা নিয়ে তার অ্যাডভেঞ্চার সিরিজের পরবর্তী বইটি লেখা। কাল্পনিক গল্পকে একটু বেশি রিয়ালিস্টিক করতে গিয়েই আজ এই পরিনতি, প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারবেন না কিনা সেই চিন্তায় চোখে মুখে ঘাম ছুটে গেছে লেখকের। নৌকোর মাঝি বার বার বলছে দাদা ভয় পাবেন না, চুপ করে নৌকো ধরে বসে থাকুন, যে দিকে নৌকা দোলে সে দিকে দোল খান। ঢেউ একটু শান্ত হলেই আমরা কিনারায় ভিড়বো।
অ্যাডভেঞ্চার, যুদ্ধ, মারামারির
গল্প, উপন্যাস লেখক আজ অ্যাডভেঞ্চার করতে এসে আর শান্ত থাকতে পারছে না। একটা করে ঢেউ আসছে আর নৌকাটা যেন
বহু দুর গিয়ে আছড়ে পড়ছে আর তাতে সবাই কোন রকমে টিকে আছেন নৌকার সাথে। এই পরিস্থিতির জন্য কাকে দোষ
দিবেন লেখক? নিজেই তো ভ্রমনের আগে অবহাওয়া বার্তা দেখে আসেননি, তাছাড়া এত দুরে ছোট নৌকা নিয়ে মাঝিও আসতে
চায়নি, শুধু অ্যাডভেঞ্চার ফিল নিতেই আজ এই পরিস্থিতি।
আস্তে আস্তে ঝাড়ো বাতাস বাড়তে শুরু করেছে,
ঢেউ গুলো এখন আগের থেকেও আরো বিশাল আকার হয়ে আসছে, নৌকা যেন রোলার কোস্টারের মত দুলছে, কখনো উপরে উড়ে উঠছে, কখনো নিচে দেবে যাচ্ছে। ঝড়ো বাতাসের কারনে লেখকের চিৎকার ভালো ভাবে শোনা যাচ্ছে
না, নৌকার মাঝি শান্ত হয়ে বৈঠা ধরে আছেন, এছাড়া এখন আর কিবা করার আছে। মাঝে মাঝে লেখক
কে বুঝানোর চেস্টা করছে যদি নৌকা ডুবে যায়, তবে স্রোতের সাথে ভেসে ভেসে কিনারায় উঠতে
হবে। অযথা হাত-পা নাড়িয়ে শক্তি ব্যায় করার দরকার নেই।
মাঝির কথা গুলো ভাংগা ভাংগা শুনতে পেলেও নিজেকে শান্ত রাখতে পারছে না লেখক, ভাবছেন যেকোন মুল্যে যত দ্রুত পারেন যদি এই উত্তাল সমুদ্র থেকে কিনারায় উঠতে পারতেন।
মাঝির কথা মত ভারি কাপড় শরির থেকে খুলে ফেলেছেন লেখক। কিন্তু তার
ব্যাগ, ক্যামেরা, ডাইরি এগুলোর কি হবে? এগুলো সব ভেসে যাবে সাগরে? এতক্ষন ছিলো কুলে
ফেরার চিন্তা কিন্তু এখন হচ্ছে জীবন বাঁচানোর চিন্তা। দৃষ্টির সীমানায় কোন নৌকা, জাহাজ তো
দুরের কথা স্পষ্ট করে কিছুই বুঝা যাচ্ছে না এখন, পরিস্থিতি ক্রমশ খারপ হচ্ছে দেখে ভয়ে চোখ
বন্ধ করে ভুলে থাকার চেস্টা করছে লেখক।
আকাশটা এখন বেশ পরিস্কার, স্পট ভাবে চাঁদটাকে
দেখা যাচ্ছে। নিঝুম চারিদিক, ঠিক কোথায় এসে উঠেছে বুঝে উঠতে পারছেনা মাঝি রতন। ঝড়ের
মাঝে হঠাৎ একটা বিশাল বড় ঢেউ এসে তলিয়ে দিয়ে গেছে নৌকাটা। আসে পাশে একটু খোঁজার মত করে দেখছে
রতন মাঝি নাহ, লেখকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। রতন ভাবছে লোকটার ভাগ্য ভালো হলে ও আমার কথা
মত যদি ধৈর্য্যধরে, অযথা হাত-পা দাপাদাপি না করে স্রোতে ভেসে থাকার চেস্টা করলে তিনিও হয়ত কুলের কোন না কোন স্থানে এসে পড়বেন। তা না হলে হয়ত শুধু দেহটা এসে পড়বে।
গল্প থেকে পাওয়া শিক্ষাঃ
২। কোন কাজের পূর্বে সেই বিষয়ে রিচার্স করা।
৩। যেকোন বিষয়ে অভিজ্ঞদের কথা শোনা এবং সে মত কাজ করার চেস্টা করা।
লেখকঃ মুহাম্মাদ আজম
তারিখঃ ৩/১১/২০২২ সকাল ৭:৩০
0Comments
Post a Comment